কু-দৃষ্টি গোনাহের প্রথম ধাপ
ঈমানদার মুসলমানকে আক্রান্ত করতে শয়তানের প্রথম তীর হচ্ছে কু-দৃষ্টি। দৃষ্টিই প্রথমত গোনাহের কথা চিন্তা করায়। অতঃপর মন স্থির সংকল্প করে। ফলে গোনাহ সংঘটিত হয়ে যায়। দৃষ্টি যদি এমন কিছু না দেখত যা গোনাহের ইচ্ছা জাগায়, তাহলে সেই গোনাহও সংঘটিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কুরআন কারীমে ইরশাদ করেন, ‘হে নবী, আপনি মুমিন পুরুষদের বলে দিন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নামিয়ে রাখে, এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। এটাই হবে তাদের জন্য সর্বোত্তম পবিত্রতা। নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা তাদের যাবতীয় কাজকর্ম সম্পর্কে সম্যক অবগত।’ (সূরা নূর: ৩০)
সুতরাং দৃষ্টির হেফাজতের মাঝেই লজ্জাস্থানের হেফাজত। দৃষ্টিকে আল্লাহর ভয়ে ভীত রাখতে পারলে মুমিন অন্যান্য গোনাহ থেকেও নিরাপদ থাকতে পারবে। অন্যথায় মনের শত দৃঢ়তা সত্ত্বেও গোনাহ সংঘটিত হয়েই যাবে। তাই দৃষ্টিই হচ্ছে মুমিনের মনে শয়তানের প্রবেশ পথ। পরবর্তী আয়াতে আল্লাহ তাআলা মুমিন নারীদের প্রতি হিদায়াত দান করে বলেছেন, ‘হে নবী! আপনি মুমিন নারীদেরও বলে দিন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নামিয়ে রাখে এবং লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। তারা যেন সাধারণত যা প্রকাশমান, তা ব্যতিত তাদের সৌন্দর্যের প্রকাশ-প্রদর্শন না করে।(সূরা নূর: ৩১)
এই দুই আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা মুমিন-মুমিনাদের প্রতি গোনাহের এক মূলনীতি পেশ করেছেন। অর্থাৎ গোনাহের জন্যে প্রথম সিঁড়ি হচ্ছে দৃষ্টি। কেউ যদি গোনাহ থেকে বাঁচতে চায়, আর দৃষ্টিকে সংযত না রাখে, তাহলে সে কখনই সফলকাম হবে না।
কুরআনুল কারীমের পাশাপাশি হাদীসে নববীতেও দৃষ্টিকে যথাযথ হেফাজতের ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে। হযরত বুরাইদা থেকে বর্ণিত আছে, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত আলীকে লক্ষ্য করে বলেছেন, হে আলী অনিচ্ছাকৃত দ্বিতীয়বার চোখ ফিরিয়ো না। কেননা প্রথমটি তোমার জন্য বৈধ, দ্বিতীয়টি বৈধ নয়।(মিশকাত শরীফ)
– মাওলানা মাহদী আব্দুল হালিম