খাদ্যে ভেজাল প্রয়োগ : মানবতা বিরোধী একটি অপরাধ
মুহাম্মদুল্লাহ ইয়াহ্ইয়া
মহান স্রষ্টা আল্লাহ তাআলা মানুষসহ সকল মাখলুককে সৃষ্টি করে তাদের জন্য ব্যবস্থা করেছেন অন্ন-বস্ত্র বাসস্থানসহ প্রয়োজনীয় সবকিছু। বিশুদ্ধতা ও নির্মলতায় সম্ভৃদ্ধ করে বিশ্ব-প্রকৃতিতে তিনি সৃষ্টি করেছেন হাজারো নেয়ামত। নির্ভেজাল খাদ্য তম্মধ্যে অন্যতম। কুরআন পাকে ইরশাদ হচ্ছে- وَأَنْزَلْنَا مِنَ السَّمَاءِ مَاءً طَهُورًا অর্থ- আর আকাশ থেকে আমি বিশুদ্ধ পানি বর্ষণ করি। (সূরা ফুরকান, আয়াত-৪৮)।
আরো ইরশাদ হচ্ছে- يَا أَيُّهَا النَّاسُ كُلُوا مِمَّا فِي الْأَرْضِ حَلَالًا طَيِّبًا وَلَا تَتَّبِعُوا خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُبِينٌ অর্থ- হে মানবজাতি! পৃথিবীতে যা কিছু বৈধ ও পবিত্র খাদ্যবস্তু আছে তা থেকে তোমরা আহার কর এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয় সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। (সূরা বাকারা, আয়াত-১৬৮)
কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হলো মানুষের কৃতকর্মের কারণেই মানুষ আজ ভেজালমুক্ত নিরাপদ খাদ্য থেকে বঞ্চিত। এর দায় মানুষের। এর দায় আমাদের। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন -ظَهَرَ الْفَسَادُ فِي الْبَرِّ وَالْبَحْرِ بِمَا كَسَبَتْ أَيْدِي النَّاسِ অর্থ- মানুষের কৃতকর্মের কারণেই স্থলে ও জলে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে। (সূরা রুম , আয়াত -৪১)
সুতরাং দেশবাসী ও জাতির নিরাপদ ও ভেজালমুক্ত খাদ্যের যোগান নিশ্চিত করন এবং খাদ্যে ভেজাল প্রয়োগের মানবতা বিরোধী ও শরীয়ত গর্হিত এ প্রবনতা দূরীকরণে সর্বস্তরের ভোক্তা ও বিক্রেতার মাঝে সচেতনতা তৈরী করা আবশ্যক। এ ব্যাপারে সচেতনতা তৈরীর লক্ষ্যে খাদ্যে ভেজালের গতি-প্রকৃতি, ভয়াবহ পরিনতি এবং এ সমস্যা থেকে উত্তরণের উপায় সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো।
অসাধু ব্যবসায়ীদের দৌরাত্মে বাজারে ভেজালের ছড়াছড়ি
কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর অপতৎপরতার কারণে মানুষ আজ চরম খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার শিকার। খাদ্যদ্রব্যে বিভিন্ন ক্যামিকেল আর বিষাক্ত দ্রব্যের অতিরঞ্জিত ব্যবহারে নির্ভেজাল খাদ্যের আজ বড়ই সংকট। এ ভেজাল খাদ্যের প্রভাবে ক্যান্সার, লিভার সিরোসিস এবং কিডনি অকেজো হওয়ার মত অন্যান্য ক্রনিক রোগসমূহ ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ছে। ফলমূল, মাছ, গোস্ত থেকে শুরু করে শাক-সবজি, দুধ ও অন্যান্য পানীয় দ্রব্যসহ সর্বত্র আজ ভেজালের ছড়াছড়ি। নির্বোধ মূক প্রাণীকুলও একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীর অর্থ লিপ্সা আর নিষ্ঠুরতা থেকে রেহাই পাচ্ছে না। খাদ্যে ভেজালেরও রয়েছে নানান অপকৌশল। এসকল জঘন্য তৎপরতার শিকার ভোক্তা-ক্রেতাগণই শুধু নন বরং স্বয়ং এর হোতারাও শিকার হচ্ছে সমান হারে, কিন্তু তার পরেও নৈতিকতার অভাব এবং আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাবে এ পাগলা ঘোড়া আজ লাগাম ছাড়া। নি¤েœ সরেজমীনের কিছু রিপোর্ট ও বিশেষজ্ঞদের সতর্কতা তুলে ধরা হল- জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরীক্ষাগারে ২০১০ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত তিনটি অর্থবছরে ঢাকাসহ সারাদেশের ২১ হাজার ৮৬০ টি খাদ্যের নমুনা পরীক্ষায় ৫০ শতাংশ খাদ্যে ভেজাল পাওয়া যায় এবং বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ৪৫ লাখ লোক খাদ্যে বিষক্রিয়ার ফলে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। (দৈনিক কালের কন্ঠ -২১.০৩.২০১৪) বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে এদেশে ক্যান্সার, কিডনি ব্যর্থতা, লিভার সিরোসিসসহ অন্যান্য জটিল ব্যাধিসমূহ আশংকাজনক হারে বৃদ্ধির জন্য ভেজাল, নকল ও বিষাক্ত খাদ্যসামগ্রী দায়ী।
মাছ, গোস্ত, শাক-সবজি ও ফলমূলে ভেজালের সয়লাব
মাছ,গোস্ত, শাক-সবজি ও ফলমূলের দ্রুতপচনরোধে অসাধু ব্যবসায়ীরা ফরমালিনসহ বিভিন্ন পাওয়ারফুল ক্যামিকেল ব্যবহার করে থাকে। বিশেষজ্ঞদের মতে ব্যবসায়ীরা সহনীয় মাত্রার চেয়ে ২০ গুণ বা তার চেয়েও বেশী মাত্রায় সে সকল বিষাক্ত ক্যামিকেল ব্যবহার করে থাকে। টমেটো, মাল্টা ও লিচুতে সবচেয়ে বিপদজনক মাত্রায় এর ব্যবহার হয়ে থাকে যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ঝুকিপূর্ণ বলে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন। গরু, ছাগল ইত্যাদি গবাদি পশুকে মোটা-তাজা করতে একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী বিভিন্ন ক্যামিকেল ও সারজাতীয় দ্রব্যের ব্যবহার করে যা উক্ত পশুসহ এর গোস্ত আহারকারীদের স্বাস্থ্যের জন্যও মারাত্মক হুমকি তৈরী করছে।
ফাস্টফুড ও হোটেল-রেস্তোরার খাদ্যেও ভেজাল
হোটেল রেস্তোরায় বিক্রি হওয়া সুস্বাদু গ্রিল, কাবাব, শর্মা, রোষ্ট, চিকেন স্যুপ
ইত্যাদিও ভেজাল মুক্ত নয়। ২৮ শে ফেব্রুয়ারী ২০১৪ ইং দৈনিক ‘আমাদের সময়’ পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্ট থেকে জানা যায় রাজধানীর তেজগাঁও রেলস্টেশন সংলগ্ন মুরগির আরতে অভিযান চালিয়ে ১২০ টি মৃত মুরগি হোটেলের জন্য প্রকৃয়াজাত করা অবস্থায় দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেন র্যাবের ভ্রাম্যমান আদালত। ৬ -৭ জনের অন্য একটি চক্র এ সকল মৃত মুরগি ৪০-৫০ টাকায় কিনে তা হোটেলে সস্তায় বেচে দেয়। আর অধিক মুনাফালোভী মালিকরা জেনে-শুনে তা খদ্দেরদের পরিবেশন করে থাকে।
এ ছাড়াও বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন কোম্পানীর তৈরী পোলট্রি ফিডে ক্রোমিয়ামের মত ভয়াবহ ক্যামিকেল পেয়েছেন। যা আগুনে জ্বাললেও তার ক্ষয় নেই, মাটিও তা হজম করতে পারে না। বিভিন্ন কোল্ড ড্রিংস এবং পানীয়ও রয়েছে ভেজালের এ তালিকায় এবং সমান ভাবে জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি করছে নীরবভাবে।
ঔষধেও ভেজাল
ভেজালের এ তালিকা থেকে সুস্থতার নিয়ামক ঔষধও মুক্ত নয়। গত ২৪ শে মার্চ ২০১৪ ইং র্যাব ১ এর মোবাইল কোর্ট “হেলথ ভিশন বাংলাদশ” এর এক চিকিৎসককে হেপাটাইটিস বি এর ভ্যাকসিনের নামে রোগীর শরীরে শুধুই পানি পুশকরা অবস্থায় গ্রেফতার করে। ( দৈনিক ইত্তেফাক – ২৫.০৩.২০১৪ ইং)
তেমনিভাবে মিডফোর্ডের ঔষধের পাইকারী মার্কেটে নকল স্যালাইন কারখানার সন্ধান পায় র্যাবের একটি বিশেষ টিম। (দৈনিক ইনকিলাব – ২০.০৩.২০১৪ ইং)
এছাড়াও বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানীর ভেজাল ঔষধ সেবনে রুগীর মৃত্যুর সংবাদ পত্রিকার হেডলাইন হওয়ার ঘটনাও কম নয়।
শিশু খাদ্যও নিরাপদ নয়
ভেজালের সয়লাবে শিশুখাদ্যও নিরাপদ নয়। দুধ, চকলেট, ইত্যাদিতেও বিষাক্ত ক্যামিকেল ও ক্ষতিকর বিভিন্ন রং এর ব্যবহার তো দিন দিন বেড়েই চলছে। তেমনিভাবে মসলাজাত দ্রব্যে ইটের গুড়াসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর বস্তু মিশিয়েও ভেজাল তৈরী করা হয়।
কৃষক পর্যায়ে অসচেতনতা
কীটনাশক ব্যবহার করার পর ফল বা শাক-সবজির নিরাপত্তার জন্যে ১৫ দিনপরে উঠানোর নিয়ম থাকলেও তা মানছে না অনেক কৃষক। খবরে প্রকাশ-কীটনাশকযুক্ত লিচু খেয়ে গত বছর দিনাজপুরে ১৪ শিশুর মৃত্য ঘটে।
খাদ্যে ভেজাল বিস্তারের কারণ
২০১৩ থেকে ২০১৪ মার্চ পর্যন্ত খাদ্য নিরাপত্তা সম্পর্কে টি, আই, বি, কর্তৃক পরিচালিত এক জারিপে খাদ্যে ভেজালের কারণ সম্পর্কে বলা হয় যে, ফরমালিন আমদানি তদারকি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রনের অভাব, খাদ্যের নমুনা পরীক্ষার ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রতা, সংশ্লিষ্টদের মাঝে পারষ্পরিক সমন্বয়হীনতা, দূর্নীতি এবং মামলা পরিচালনায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ইত্যাদি খাদ্যে ভেজাল বিস্তারের অন্যতম কারণ। মূলত নৈতিকতার অভাব, অধিক মুনাফার লোভ, দূর্নীতি, সংশ্লিষ্ট আইন বাস্তবায়নে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা সর্বোপরি মানবতাবোধের অভাব এবং ধর্মীয় মূল্যবোধের অভাব খাদ্যে ভেজাল প্রয়োগের অন্যতম কারণ।
খাদ্যে ভেজাল সমস্যা থেকে উত্তোরণের উপায়
এ সমস্যাগুলো থেকে পরিত্রাণ পেতে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও নৈতিকতার শিক্ষার ব্যাপক প্রচার প্রসার ও সচেতনতা সৃষ্টি করা আবশ্যক । পাশাপাশি সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ সমূহ এবং সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠন সমূহকেও এ অপতৎপরতা বন্ধে
সক্রিয় ও সচেষ্ট থাকতে হবে।
খাদ্যে ভেজাল প্রয়োগ ও ধোঁকাবাজি ইসলামে নিষিদ্ধ
ইসলাম মানবজীবনের সর্বক্ষেত্রে নিরাপত্তার শিক্ষা দেয়। রাসূলুল্লাহ (সা:) ইরশাদ করেন- المسلم من سلم المسلمون من لسانه ويده অর্থ- প্রকৃত মুসলামন তো সেই যার হাত ও মুখের অনিষ্টতা থেকে অন্যরা নিরাপদ থাকে। (সহীহ মুসলিম)। ক্রয়-বিক্রয় এবং লেনদেনের ক্ষেত্রে ও অসদুপায় অবলম্বন এবং ধোকা প্রবঞ্চণাকে ইসলাম নিষিদ্ধ করেছে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন -يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَأْكُلُوا أَمْوَالَكُمْ بَيْنَكُمْ بِالْبَاطِلِ إِلَّا أَنْ تَكُونَ تِجَارَةً عَنْ تَرَاضٍ مِنْكُمْ হে মুমিনগন অন্যায়ভাবে একে অপরের সম্পদ ভক্ষণ কর না কেবল পরস্পরের সম্মাতিক্রমে বৈধ উপায়ে ব্যবসা কর। (সুরা নিসা-২৯)
রাসূলুল্লাহ (সা:) একদা এক বাজারে গিয়ে খাদ্যশস্যের একটি স্তুপ দেখতে পেলেন। পরীক্ষা করার উদ্দেশ্য সেই স্তুপে হাত ঢুকিয়ে ভিতরের শস্য বের করে দেখতে পান উপরের গুলো শুকনো হলেও ভিতরের গুলো ভিজা, তখন তিনি বলেনليس منا من غش অর্থ- যে ধোকাদেয় সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়। (আবু দাউদ)
তেমনিভাবে মাপে যারা কম দেয় তাদের ব্যাপারে জাহান্নামের হুসিয়ারি উচ্চারিত হয়েছে সূরা মুতাফফিফীনে। হযরত শুয়াইব (আ:) তার সম্প্রদায়ের অসৎ ব্যবসায়ীদের লক্ষ্য করে বলেন- وَيَا قَوْمِ أَوْفُوا الْمِكْيَالَ وَالْمِيزَانَ بِالْقِسْطِ وَلَا تَبْخَسُوا النَّاسঅর্থ- হে আমার স্বজাতি! ন্যায় নিষ্ঠার সাথে সঠিকভাবে পরিমাপ কর ও ওজন দাও, লোকদের জিনিষপত্রের কোন রূপ ক্ষতি কর না। (সূরা হুদ: আয়াত: ৮৫)
অসৎ ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে রাসূলুল্লাহ (সা:) ইরশাদ করেন- التجار يحشرون يوم القيامة فجارا إلا من اتقي وبر وصدق অর্থ: ব্যবসায়ীদের কেয়ামতের দিন পাপাচারীদের সাথে উঠানো হবে। তবে সে সকল ব্যবসায়ী ছাড়া যারা লেনদেনে আল্লাহর ভয়কে জাগরুক রাখে, সৎপন্থা অবলম্বন করে এবং সত্য বলে। (তিরমিযী ১/২৩০)
তেমনিভাবে মুসনাদে আহমদের এক বর্ণনায় রাসূলুল্লাহ (সা:) থেকে বর্ণিত আছে – لا ايمان لمن لا امانةله অর্থ: যার মাঝে আমানতদারী নেই সে পূর্ণ মুমিন নয়।
(মুসনাদে আহমদ ৩/১৩৫)
আমানতদার সৎ ব্যবসায়ীদের জন্য সুসংবাদ
ব্যবসা করা নবীর সুন্নাত। হালাল উপার্জনের একটি অন্যতম মাধ্যম ব্যবসা। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন – ألله البيع و حرم الربا أحل অর্থ: আল্লাহ ব্যবসাকে বৈধ করেছেন এবং সুদকে হারাম করেছেন। (সূরা বাকারা-২৭৫)
সৎ ও ন্যায়নিষ্ঠ ব্যবসায়ীর জন্য সুসংবাদ ঘোষণা করে রাসূলুল্লাহ (সা:) ইরশাদ করে التاجر الصدوق الامين مع النبين و الصديقين والشهداء অর্থ: সৎ ও বিশ্বস্ত ব্যবসায়ীর হাশর হবে নবীগণ, সিদ্দীকগণ এবং শহীদগণের সাথে। (তিরমিযি- ১/২২৯) উপরুক্ত আয়াত ও হাদীসের আলোকে পরিস্কার হয়ে যায় ব্যবসার অসদুপায়ের মাধ্যমে খাদ্যে ভেজালের মিশ্রন শরীয়তের দৃষ্টিতে মারাত্মক গুনাহ, ঈমান বিধ্বংসী কাজ এবং মানবতা বিরোধী একটি অপরাধ। সুতরাং মহান আল্লাহর দরবারে জববদিহিতার ভয়কে সর্বদা মনে জাগরুক রেখে সৃষ্টির অকল্যাণ ও খাদ্যে ভেজাল থেতে বাঁচা ঈমানী দায়িত্ব। মানবতার দাবী।