তথা কথিত আহলে হাদীসের অপপ্রচার ও তার প্রতিকারে উলামায়ে কেরামের করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভা
بسم الله الرحمن الرحيم
আলহামদুলিল্গলাহ! গত ৮ জুন ২০১৫ ইং রোজ সোমবার সকাল ৭.০০ টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ঐতিহ্যবাহী জামিয়া শারইয়্যাহ মালিবাগ ঢাকা-এর আয়োজনে এক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচ্য বিষয় ছিল বর্তমান জামানার জঘন্যতম ফেতনা, তথাকথিত আহলে হাদীস সম্প্রদায়ের অপপ্রচার, ধর্ম সম্পর্কে বিভ্রান্তি মূলক ব্যাখ্যা এবং তার প্রতিকারে ওলামায়ে কেরাম এর করণীয় শীর্ষক আলোচনা।
এতে সভাপতিত্ব করেন জামিয়ার ভাইস প্রিন্সিপ্যাল হযরত মাওলানা আনওয়ার শাহ সাহেব দা. বা.। এতে অংশ গ্রহণ করেন ঢাকা শহরের শীর্ষস্থানীয় ওলামায়ে কেরামগণ।
আলোচনার সার সংক্ষেপ:
আহলে হাদীস সম্প্রদায় মূলত হাদীসের অনুসারী জামাত নয় বরং এই নামটা তাদের চুরি করা এবং তাদের নতুন দর্শনের প্রচার ও গ্রহণ যোগ্য বানানোর জন্য বৃট্রিশ সরকার থেকে এই নামটা নিজেদের জন্য রেজিষ্টার করে নিয়েছে। যাতে নামের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সাধারণ মানুষ তাদের দ্বীনের দিকে আকৃষ্ট হয়। অথচ মৌলিক ভাবে আহলে হাদীস তো বলা হয় ঐ সমস্ত লোককে যার কাছে হাদীস আছে, যে হাদীস পড়ায়, যে হাদীসের ব্যাখ্যা করতে পারে এবং যার জীবনের কর্ম ও ব্যস্ততাই হলো হাদীস নিয়ে চলা। যা সাহাবীদের জামানায় হযরত আবু হুরায়রা রা. সহ হাদীসে লিপ্ত বহু সাহাবীর মাঝে ছিল। আর পরবর্তীতে মুহাদ্দিসীনে কেরাম এবং বর্তমান জামানায় কওমী মাদরাসায় যে সব ওলামায়ে কেরাম মাথার ঘাম পায়ে ফেলে রাতকে দিন বানিয়ে হাদীস অধ্যায়ন, লেখা ও পড়ানোর কাজে লেগে আছেন। অথচ আজ আমাদের সমাজে এমন সব লোকেরা নিজেদেরকে আহলে হাদীস নামে প্রচার করে যাচ্ছে যাদের অনেকেই এমন আছে যে একটা হাদীসের বাক্যও রাসূলের জবান মোবারকে যে ভাষায় বের হয়েছিল সেই ভাষায় মুখস্ত বলা তো দুরের কথা দেখেও পড়তে পারে না।
পূর্বের জামানার প্রকৃত আহলে হাদীস ও বর্তমানের তথা কথিত আহলে হাদীসের মাঝে দ্বিতীয় পার্থক্য হলো, মৌলিক ভাবে পূর্ববর্তী জামানায় যারা আহলে হাদীস ছিলেন তাদের সবাই কুরআন, হাদীস, ইজমা ও কিয়াসসহ শরীয়তের চারও দলীলকে মানতেন। আর বর্তমানে যারা নিজেদেরকে আহলে হাদীস বলে প্রচার করতেছে, তারা কুরআন, হাদীস ছাড়া বাকী দুটি দলীলকে মানে না। শুধু তাই নয় বরং তারা তো বুখারী শরীফের আট হাজার হাদীস ছাড়া বাকী লাখ লাখ হাদীস কেও মানে না। শুধু তাই নয় বরং অন্য সব হাদীসকে অস্বীকার ও ব্যাঙ্গ করে বেড়ায়। অতএব, তারা আহলে হাদীস নয় বরং মুনকিরে হাদীস তথা হাদীস অস্বীকারকারী জামাত ও দল। এবং তাদের প্রকৃত নাম হওয়া উচিত লা-মাযহাবী বা লাগামহীন মুসলিম জামাত অথবা নব্য খারেজী অথবা মুনকিরে হাদীস।
নব্য খারেজী বলাটা অবাস্তব নয় বরং পূর্ব জামানার খারাজীদের সাথে তাদের কয়েকটি মিল রয়েছে।
(ক) আগের জামানার খারেজী সম্প্রদায় নিজেদের ছাড়া বাকী সব মুসলমান এমনকি সকল সাহাবীদের কাফের মনে করত। বর্তমান জামানার নব্য খারেজীরাও নিজেদের ছাড়া বা মাযহাব অনুসারী সকল মুসলমানকে মুশরিক মনে করে।
(খ) আগের জামানার খারেজী সম্প্রদায় ছিল উগ্রপন্থী। বর্তমান জামানার নব্য খারেজীরাও উগ্রবাদিতায় বিশ্বাসী, তাই দেখা যাচ্ছে সমাজে উগ্রবাদী বলে যারা প্রমনিত হচ্ছে তাদের অধিকাংশ বা বলতে গেলে সবাই ঐ দলের সাথে সম্পৃক্ত।
(গ) আগের খারেজীদের মাঝে কুরআন সুন্নাহর গভীর জ্ঞান ছিল না। ভাষা ভাষা অসম্পূর্ন জ্ঞান ছিল। বর্তমান জামানার নব্য খারেজীদের কুরআন সুন্নাহ সম্পর্কে ভাষা ভাষা জ্ঞান, গভীর জ্ঞান তাদের মাঝে নেই।
বর্তমান জামানার আহলে হাদীসের তথা নব্য খারেজীদের মৌলিক কাজ হলো, মুসলমানদের নামাযে সন্দেহ ঢুকিয়ে দেয়া। তাই তারা বে-নামাজীদের পেছনে মেহনত করে না, বে-ঈমানের পেছনে মেহনত করে না। বরং তাদের মেহনতের মূল কেন্দ্রবিন্দু হল নামাজীদেরকে নিয়ে যে, তোমাদের নামায হচ্ছে না। এভাবে পড়লে হবে না, তাদের মত পড়তে হবে। মৌলিকভাবে তারা মুসতাশরিকীন দ্বারা প্রভাবিত।
তাদের আরেকটি কাজ হলো, বর্তমানে দ্বীনের মেহনতের যতগুলো সহীহ পথ আছে, সবগুলো সম্পর্কে সন্দীহান করে দেওয়া। তাই তারা দাওয়াত ও তাবলীগ বিরোধী, কওমী মাদ্রাসা বিরোধী, হক্কানী পীর মাশায়েখ বিরোধী ইত্যাদি। সকল মেহনতের বিরুদ্ধেই তারা কাজ করে যাচ্ছে।
তাদের বিভ্রান্তি প্রচারের মাধ্যম
নব্য খারেজী সম্প্রদায় যে সব মাধ্যমে তাদের নতুন মতবাদের প্রচার করছে তার মাঝে কয়েকটি মাধ্যম হলো:
(ক) ইন্টারনেট, টেলিভিশন ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় মুজতাহিদের ভুমিকায় গিয়ে ইমাম আবু হানিফা রহ., ইমাম মালেক রহ., ইমাম শাফী রহ., ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহ. এর মত মুজতাহিদ ইমাম যাদেরকে সারা বিশ্ব মেনে নিয়েছে তাদের জ্ঞানগর্ভ আলোচনা ও কুরআন সুন্নাহর ব্যাখ্যাকে অবজ্ঞার সুরে বলে জনমতে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে যাচ্ছে। বিচক্ষণ দর্শক ও পাঠকের কাছে অনুরোধ ঐ সব মিডিয়ায় বসে এক তরফা আলোচনার মঞ্চ থেকে নেমে ওলামায়ে কেরামদের সামনে আসতে বলুন। ওদের সাহস নাই, বিশেষত ঢাকা শহরের অধিকাংশ মসজিদের খতীব ও বড় বড় মাদরাসার মুফতী এবং মুহাদ্দিসদের সামনে এসে কথা বলার । সুতরাং এই মিডিয়ার প্রতি আপনারা আস্থাশিল হয়ে নিজের ইমান ও আখেরাতকে নষ্ট করবেন না।
(খ) তাদের দ্বিতীয় মাধ্যম হলো টাই ও শার্ট পেন্ট পড়া ডাঃ জাকির নায়েক। শ্রোতাগণ অবশ্যই উপলদ্ধি করে থাকবেন যে, হিন্দুদের গীতা, খৃষ্টানদের বাইবেল এবং মুসলমানদের কুরআনের মাঝে তুলনামূলক আলোচনার ক্ষেত্রে ডাঃ জাকির নায়েক প্রশংসার ধাবি রাখলেও ইসলাম ধর্মে মুসলামনদের দৈনন্দিন আমলের বিধান বর্ণনার ক্ষেত্রে তার জ্ঞানের যথেষ্ট ধৈন্যতা রয়েছে। ভদ্রলোকের কুরআন তিলাওয়াত কতটুকু বিশুদ্ধ শ্রোতাবৃন্দ খেয়াল করে দেখবেন ও শুনবেন। টাই পরিধানের ব্যাপারে সারা দুনিয়ার কোন মুত্তাকী পরহেজগার আলেম এর মাঝে এর উপমা পাওয়া যায় কি-না। দীর্ঘদিন যাবত যাদের মাধ্যমে সারা বিশ্ব ব্যপি ধর্মের কাজ চলে আসছে এমন সব ওলামায়ে কেরামের সাথে তার সম্পর্ক আছে কি-না, এসব বিষয়গুলো অবশ্যই সন্ধান করে দেখতে হবে তাকে মানার জন্য, সবগুলোর ক্ষেত্রেই তার ব্যাপারে উত্তর নেতিবাচক হবে। সুতরাং তার ব্যাখ্যায় আমল হতে পারে না। বরং তা হবে গোমরাহী ও ভ্রান্তি।
(গ) মসজিদে নববী- মদীনা শরীফ ও মসজিদে হারাম মক্কা শরীফে নামাযের পদ্ধতিকে মাধ্যম বানিয়ে আরেকটা অপপ্রচার করে থাকে যে, দেখেন না? মক্কায় মদিনায় কিভাবে নামায পড়ে?
হায় আফসোস! চিটাগাং এর যাত্রীকে সিলেটের বাস দেখাইয়া বুঝাইতেছে যে, বাসটা কত সুন্দর! ওঠেন, চললেই তো হল।
প্রিয় মুসলিম ভাইয়েরা! এটা যেমন বোকা বানানো, ঠিক মক্কায় মদিনার নামায দেখাইয়া আপনার নামাযকে ভুল আখ্যা দেওয়াও আপনাকে বোকা বানানোর নামান্তর। কারণ মক্কা মদীনার ইমামগন ও মুসল্লিগন এভাবে নামায পড়ে তাদের মাযহাবের ইমাম, ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহ. এর মাযহাব অনুস্বরন করে এবং বাকী সব মাযহাবকে শ্রদ্ধা ও সঠিক বলে স্বীকার ও বিশ্বাস করে । আর এর বিপরিতে তথা কথিত আহলে হাদীস আপনাকে বোকা বানাইতেছে এই চারও ইমামের বিরুদ্ধে ও মাযহাব অস্বীকার করে।
শুধু তাই নয় বরং যারা মাযহাব মানে তাদেরকে মুশরিক বলে আখ্যা দিয়ে। তাহলে তাদের বিশ্বাস অনুযায়ী মক্কা মদিনার লোকেরা ইমাম আহমদের মাযহাব মানার কারণে মুশরিক আর আপনাকে ধোকা দিচ্ছে যে, এদের মত নামায বানান।
(ঘ) তাদের ছলচাতরীর আরেকটা মাধ্যম বানিয়েছে বুখারী শরীফকে। তারা বলে বেড়ায়, আমরা সহীহ হাদীস ও বুখারী শরীফ মোতাবিক নামায পড়ি এটাই সহীহ হাদীস, তাদের এই ব্যাখ্যাটাও একটা ধোকা। কারণ তারা যে ভাবে নামায পড়ে এই নামাযের বিবরণ সম্পুর্ণ ভাবে বুখারীতে নেই। বরং বুখারী শরীফের সহীহ হাদীস কে নিজেদের মনগড়া অপব্যাখ্যার মাধ্যমে জাতীকে বিভ্রান্ত করে যাচ্ছে। তার দু’ একটা উদাহরণ পেশ করছি।
১. বুখারীতে আছে হযরত আয়শা রা. বলেন,
انه سأل عائشة رضى الله عنها كيف كانت صلاة رسول الله صلى الله عليه وسلم فى رمضان فقالت ما كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يزيد فى رمضان ولا فى غيره على احدى عشرة ركعة (رواه البخارى)
অর্থাৎ রাসূল সা. তিন রাকাত বিতরসহ রাতে ১১ রাকাত নামায পড়েছেন। এই হাদীসটি সহীহ বুখারীতে আছে, কিন্তু এটা যে তারাবীর নামায ছিল এ কথাটি বোখারীর কোথাও নেই। অথচ এই হাদীসটি দ্বারা উম্মতকে বিভ্রান্তি করছে যে, বোখারীতে আছে তারাবীর নামায আট রাকাত।
২. আরেকটা উদাহরণ, তথা কথিত আহলে হাদীস লোকেরা বলে আমীন জোরে বলা সুন্নত। প্রমাণ বুখারী শরীফ। পাঠকের কাছে অনুরোধ বোখারী পড়ে দেখবেন যে, তারা যেই হাদীস কে প্রমাণ বানিয়েছে মুলত সে হাদীসে আমীন বলার ফযীলত বর্ণনা করা হয়েছে আমীন জোরে আস্তে বলার কোন বক্তবই তাতে নেই। হ্যাঁ, বেশির থেকে তারা এতটুকু দেখাতে পারবে যে, এই হাদীসের আলোকে ইমাম বোখারী রহ. নিজের অভিমত ব্যাক্ত করেছেন জোরে বলার। তাহলে ইমাম বোখারীর রায়কে তারা প্রচার করতেছে বোখারী শরীফের হাদীসে আছে আমীন জোরে বলা সুন্নত। ইমাম বোখারী রহ নিজস্ব রায়কে তারা হাদীস বলে উম্মতকে বিভ্রান্ত করছে, যা ইমাম বোখারী নিজেও করেন নি।
এ কয়েকটি উদাহরণ পেশ করা হল যে, বোখারী শরীফকে মাধ্যম বানিয়ে উম্মতকে বিভ্রান্ত করতে শুধু ওটা বুখারী শরীফে আছে বললেই আপনি মাথা পেতে মেনে নিবেন না, বরং আলেমদের স্বরনাপন্ন হয়ে সঠিক ব্যাখ্যা ও সঠিক হাদীস বুঝে নিন।
তাদের অপপ্রচারের একটা বানানো শ্লোগান যে, মাযহাব আবার কি? রাসুল সাঃ. কোন মাযহাবের ছিলেন? ঐ সময় মাযহাব ছিল না সুতরাং আমরা হাদীস মানি মাযহাব মানি না।
তাদের এ ধরণের বক্তব্যও লোকদের বোকা বানানোর নামান্তর। কারণ মাযহাব তো ওসব লোকদের জন্য মানা জরুরী যারা কুরআন হাদীস থেকে সরাসরি দৈনন্দিন জীবনের সবগুলো বিষয়ের সমাধান খুজে বের করতে পারে না। তারা বিজ্ঞ ইমাম ও মুজতাহিদের স্বরনাপন্ন হয়ে সমাধান জেনে আমল করবে, এটার নামই মাযহাব মানা।
আল্লাহ তাআলা এ শ্রেণীর লোকদেরকে উদ্দেশ্যে করে বলেন,
(43فاسئلوا اهل الذكر ان كنتم لا تعلمون (سورة النحل ــ
অনুবাদ: “সুতরাং যদি তোমাদের জানা না থাকে তাহলে তোমরা অভিজ্ঞ লোকদের নিকট
জিজ্ঞাসা কর ”। (সুরা নাহ্ল, আয়াত-৪৩)
এই আয়াতের আলোকে আমরা বলতে পারি যে, মাযহাব মানতে আল্লাহ তায়ালাই নির্দেশ দিয়েছেন।
এখন কথা হলো, যে জানে সে তো অন্যের স্বরনাপন্ন হওয়ার দরকার নেই। রাসূলের উপর অহি আসছে, সরাসরি আল্লাহর বানী যার কাছে আছে সে, মাযহাব মানার কি অর্থ হতে পারে? রাসূল সা. কোন মাযহাব মানে নাই তাই মাযহাব নাই, রাসূলের সথে তুলনা করে এভাবে বলা চরম দৃষ্টতার নামান্তর। সাহাবায়ে কেরাম ফেকাহ মানতেন, যার কাছে যে বিষয়ের জ্ঞান ছিল না সে অন্যের স্বরণাপন্ন হয়ে আমল করার হাজারো প্রমান রয়েছে।
ইয়ামানবাসী মুয়াজ রা. কে এবং কূফাবাসী আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. কে মেনে চলতেন। যে দিন থেকে ইসলাম যে দিন থেকে হাদীস সে দিন থেকে ফিকাহ এবং সে দিন থেকে মাযহাব মানা চলে আসছে। তবে ফিকাহ ও মাযহাব সংকলিত ছিলনা, পরবর্তীতে চার ইমাম তা সংকলন করেছেন, আবিস্কার করেন নি। বিষয়টি এমন যে, রাসূলের জামানায় সংকলন আকারে বোখারী, মুসলীম বা সিহাহ সিত্তা ছিলনা বরং তা অনেক পরে সংকলন হয়েছে। এ বলে কি এমন পাগলের বক্তব্যকেও আমরা মানব যে বলে রাসূলের বোখারী ছিলা না, সিহাহ সিত্তা ছিল না- তাই আমরা তা মানব না? না, না কখনোই আমরা এ ধরণের কথা মানব না। হাদীসের এই সংকলনকে যেমন আমরা মানি কেননা হাদীস তো রাসূল সা. থেকে ঠিক ফিকাহ ও মাযহাব সংকলন কেও আমরা মানি যা রাসূল (সাঃ) থেকে উৎসারিত হয়েছে।
এহেন পরিস্থিতিতে উলামায়ে কেরাম এর করণীয়
১. যে সব মাসআলা নিয়ে তথা কথিত আহলে হাদীস সমাজে ফেতনা করছে সে সব মাসআলাগুলো প্রমাণসহ খতীবগণ জুমআর বয়ানে মুসল্লিদেরকে সাবলিল ভাষায় বয়ান করবেন।
২. সম্ভব হলে মাসে একবার মুসল্লিদেরকে নিয়ে নামাযের প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করবেন। এবং আমরা যেভাবে নামায পড়ে আসছি তা যে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নামাযের মতই তা বুঝিয়ে দিবেন।
৩. মাদরাসার পাঠদানের ক্ষেত্রে হিফ্জুন নুসুস তথা বিষয় ভিত্তিক হাদীস ছাত্রদেরকে মুখস্থ করানো।
৪. বিষয় ভিত্তিক মাসআলাগুলো সহজ ভাষায় দলীলসহ ছোট ছোট বই পুস্তিকা রচনা করে প্রচার করা।
এহেন সব অপপ্রচার ও বিভ্রান্তির কারণে কুরআন সুন্নাহ পারদর্শী সকল ওলামায়ে কেরাম একমত যে নব্য খারেজী ও তথা কথিত আহলে হাদীস সম্প্রদায় বাতিল, গোমরাহ ও ভ্রান্ত দল। সকল মুসলমান ভাই বোনদেরকে এ ভ্রান্ত জামাত থেকে সতর্ক ও বিরত থাকার উদাত্ত আহবান রইল।
মহতি আলোচনা মজলিসে উপস্থিত উলামায়ে কেরামের মাঝে বিশেষ কয়েকজন হলেন:
১. হযরত মাওলানা আব্দুল গাফ্ফার দা.বা. শাইখুল হাদীস, জামিয়াতুল উলূমিল ইসলামিয়া ঢাকা।
২. হযরত মাওলানা আবু সাবের আব্দুল্লাহ দা.বা. শাইখুল হাদীস, জামিয়া শারইয়্যাহ মালিবাগ, ঢাকা।
৩. হযরত মাওলানা ইয়াহইয়া মাহমুদ দা.বা. শাইখুল হাদীস ও মুহতামিম, রামপুরা বনশ্রী মাদ্রাসা ঢাকা।
৪. হযরত মাওলানা মুফতী মোহাম্মদ আলী দা.বা. মুহতামিম, আফতাবনগর মাদরাসা, ঢাকা।
৫. হযরত মাওলানা মুফতী হাফীজুদ্দীন দা.বা. মুহাদ্দিস, জামিয়া শারইয়্যাহ মালিবাগ, ঢাকা।
৬. হযরত মাওলানা আহমদ মায়মুন দা.বা. সিনিয়র মুহাদ্দিস, জামিয়া শারইয়্যাহ মালিবাগ, ঢাকা।
৭. হযরত মাওলানা মাসউদুল কারীম দা.বা. মুহতামিম,
৮. হযরত মাওলানা আব্দুল আখীর দা.বা. মুহাদ্দিস,
৯. হযরত মাওলানা মুফতি হারুন দা. বা. শাইখুল হাদীস,
১০. হযরত মাওলানা লোকমান মাযহারী দা. বা. শাইখুল হাদীস,
১১. হযরত মাওলানা শাব্বির আহমদ দা. বা. মুহতামিম, বাসাবো মাদ্রাসা ঢাকা।
যারা ইসলামের মধ্যে ভেদাভেদ সৃষ্টি করে; বিশেষকরে ঈমান আক্বীদার মধ্যে। তাদের বিভিন্ন ত্রুটিগুলো সাধারণ মুসলমানদেরকে জানানো নৈতিক দায়িত্ব। আর কাজের জন্য আলেম-উলামাগণের দায়িত্ব সবচাইতে বেশী। কারণ তাদের কথা সাধারণ লোকে মানেন ও শুনেন। এটা প্রচার করা এবং মুসলিম জাতিকে এ ফেতনা থেকে রক্ষা করা এখন সময়ের দাবী। প্রত্যেক মসজিদে যদি অন্ততঃ জুমআর দিন এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয় তবে মুসলমানজাতি এসব ফেতনা বাজদের কবল থেকে রক্ষা পাবে।