ইহরাম অবস্থায় যে সকল কাজ করা নিশিদ্ধ
১.পুরুষের জন্য শরীরের কোনো অঙ্গের আকৃতি বা গঠন অনুযায়ী তৈরিকৃত বা সেলাইকৃত কাপড় পরিধান করা নিষেধ। যেমন পাঞ্জাবি, জুব্বা, শার্ট, সেলোয়ার, প্যান্ট, গেঞ্জি, কোর্ট, সোয়েটার, জাঙ্গিয়া।
-আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৮৯
সমাআলা: ইহরামের কাপড় ছিঁড়ে গেলে তা সেলাই করে কিংবা জোড়া দিয়ে পরিধান করা যাবে। তবে ইহরামের কাপড় এ ধরনের সেলাই থেকেও মুক্ত হওয়া ভালো।
-রদ্দুল মুহতার ২/৪৮১; শরহু লুবাবিল মানাসিক ৯৮
মাসআলা: ইহরাম অবস্থায় সেলাইযুক্ত ব্যাগ ব্যবহার করা ও বেল্ট বাঁধা যাবে। আদ্দুররুল-মুখতার ২/৪৮৭
২.পুরুষের মাথা ও চেহারা ঢাকা নিষেধ। মহিলাদের শুধু চেহারায় কাপড় স্পর্শ করা নিষেধ। তাই তারা পরপুরুষের সামনে চেহারায় কাপড় লেগে না থাকে এভাবে পর্দা করবে। এজন্য মাথায় ক্যাপের মত কিছু পড়ে উপরে নেকাব ফেলে দিবে। তাতে করে নেকাবের কাপড় চেহারায় লাগবেনা।
-আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৮৭
৩.পুরুষের পায়ের উপরের অংশের উঁচু হাড় ঢেকে যায় এমন জুতো পরিধান করা নিষেধ। এমন স্যান্ডেল পরবে যাতে ওই উঁচু অংশ খোলা থাকে। -রদ্দুল মুহতার ২/৪৯০
৪.ইহরামের কাপড়ে বা শরীরে আতর বা সুগন্ধি লাগানো নিষেধ। সুগন্ধিযুক্ত তেল, যয়তুন ও তিলের তেলও লাগানো যাবে না। সুগন্ধি সাবান, পাউডার, স্নো, ক্রীম ইত্যাদি ব্যবহার করা যাবে না। এমনকি পৃথকভাবে সুগন্ধি জর্দা খাওয়াও নিষেধ। পানের সাথে খাওয়াও মাকরুহ।
ইচ্ছাকৃতভাবে ফল-ফুলের ঘ্রাণ নেওয়াও মাকরুহ।
– মানাসিক ১২১; আহকামে হজ্ব ৩৪
৫.শরীরের যে কোনো স্থানের চুল, পশম বা নখ কাটা বা উপড়ানো নিষিদ্ধ।
৬.ইহরাম অবস্থায় স্বামী-স্ত্রীর বিশেষ সম্পর্ক স্থাপন করা বা স্ত্রীর সামনে এ সংক্রান্ত কোনো কথা বা কাজ করা নিষেধ।
৭.কোনো বন্যপশু শিকার করা বা কোনো শিকারীকে শিকার করতে সহযোগিতা করা নিষেধ।
৮.ঝগড়া-বিবাদ সাধারণ সময়েও নিষেধ। ইহরাম অবস্থায় এর গুনাহ আরো বেশি।
৯.কাপড় বা শরীরের উকূন মারা নিষেধ।
-আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৮৬-৪৯০; মানাসিক ১১৭-১২০
মাসআলা: ইহরাম অবস্থায় যে কাজগুলো নিষিদ্ধ তাতে লিপ্ত হওয়া গুনাহ। এর কারণে হজ্ব ত্রুটিযুক্ত হয়ে যায়। কিছু নিষেধাজ্ঞা এমন রয়েছে যেগুলো করলে ‘দম’ ওয়াজিব হয়। আর আরাফায় অবস্থানের আগে স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হলে হজ্বই নষ্ট হয়ে যায়। এর ফলে গরু বা উট জবাই করা জরুরি হয়ে যায় এবং পরবর্তী বছর ঐ হজ্বের কাযা জরুরি হয়ে যায়।
-আদ্দুররুল মুখতার ২/৫৫৮-৫৫৯; ফতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৪৪; মানাসিক ১১৭
মাসআলা: ইহরাম অবস্থায় মাথা ও মুখ ব্যতীত পূর্ণ শরীর চাদর ইত্যাদি দিয়ে আবৃত করা যাবে। কান, ঘাড়, পা ঢাকা যাবে। মাথা ও গাল বালিশে রেখে শোয়া যাবে। তবে বালিশের উপর উপুড় হয়ে বা মুখ ঢেকে শোয়া যাবে না। -মানাসিক ১২৩-১২৪; গুনইয়াতুন নাসিক ৯৩
মাসআলা: ইহরাম অবস্থায় পান খাওয়া নিষিদ্ধ নয়। তবে পানে সুগন্ধিযুক্ত মসলা বা জর্দা নিষেধ। -মানাসিক ১২১