হজ্জের দিনসমূহের ধারাবাহিক আমলসমূহ
৮ই যিলহজ্জে থেকে ১২ যিলহজ্জ পর্যন্ত মোট ৫ দিন হলো হজ্জের মূল সময়। ১৩ই যিলহজ্জেও হজ্ব সংশ্লিষ্ট কিছু ঐচ্ছিক আমল রয়েছে। নিম্নে এ দিনগুলোর আমলের ধারাবাহিক বিবরণ দেওয়া হল।
হজ্জের প্রথম দিন তথা ৮ই জিলহজ্জ এর আমল
১. তামাত্তু’ হজ্বকারীগণের জন্য হজ্জের ইহরাম বাঁধা। (এটি ফরজ)
২. ৮ তারিখের যোহর, আসর, মাগরিব, ইশা ও পরের দিনের ফজর- এ পাঁচ ওয়াক্ত নামায মিনায় পড়া। (এটি সুন্নত)
৩. ৮ তারিখের দিবাগত রাত মিনায় রাত্রি যাপন করা। (এটি সুন্নত)
৪. কমপক্ষে একবার তালবিয়া পাঠ করা। (এটি শর্ত)
৫. বেশি বেশি তালবিয়া পাঠ করা। (এটি সুন্নত)
১. তামাত্তু’ হজ্বকারীগণের জন্য হজ্জের ইহরাম বাঁধার বিবরণ:
হজে তামাত্তু¡র ইহরাম: তামাত্তু হজ্জ আদায়কারী ৮ই জিলহজ্জে হজ্জের জন্য ইহরাম বাঁধবে। তবে এই ইহরাম বাঁধার ক্ষেত্রে পুরুষ-মহিলা কারো জন্যই মসজিদে হারামে যাওয়া জরুরি নয়। মহিলারা নিজ নিজ অবস্থানস্থল থেকেই ইহরাম বাঁধবে। পুরুষরাও ইচ্ছা করলে হোটেল বা আবাসস্থান থেকে ইহরাম বাঁধতে পারে। তবে পুরুষদের সম্ভব হলে মসজিদে হারামে এসে ইহরাম বাঁধা ভালো। -গুনইয়াতুন নাসিক ২১৬
উল্লেখ্য যে, ইফরাদ হজ্ব ও কিরান হজ্ব আদায়কারী স্বাভাবিকভাবে মিকাত অতিক্রম করার সময়ই ইফরাদকারী হজ্জের ইহরাম আর কেরানকারী ওমরা ও হজ্জের ইহরাম বেঁধেছিলেন। ৮ই যিলহজ্জেও তারা ইহরাম অবস্থায় আছেন। সুতরাং তারা ঐ অবস্থায় মিনায় চলে যাবেন এবং বাকি আমলগুলো নিয়মতান্ত্রিকভাবে আদায় করবেন।
পাঁচ ওয়াক্ত নামায মিনায় আদায় করার বিবরণ:
৮ তারিখের যোহর, আসর, মাগরিব, ইশা ও পরের দিনের ফজর- এ পাঁচ ওয়াক্ত নামায মিনায় পড়া সুন্নত। সুতরাং ৮ই যিলহজ্ব সূর্যোদয়ের পর সকল হাজীকে ইহরাম অবস্থায় মিনায় গমন করতে হবে। মিনায় রওনা হওয়ার সময় হলো ৮ তারিখ সূর্যোদয়ের পর। কিন্তু আজকাল ৭ তারিখ দিবাগত রাতেই মুআল্লিমের গাড়ি রওনা হয়ে যায় এবং রাতেই মিনায় পৌঁছে যায়। যদিও ৮ তারিখ সূর্যোদয়ের পর রওনা হওয়ার নিয়ম এবং এটিই ভালো, কিন্তু অধিক ভিড়ের কারণে আগে আগে চলে যাওয়া দোষণীয় নয়। -মানাসিক ১৮৮; গুনইয়াতুন নাসিক ১৪৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২২৭
যোহর থেকে পরবর্তী দিনের ফজর পর্যন্ত মোট পাঁচ ওয়াক্ত নামায মিনায় পড়া এবং ৮ তারিখ দিবাগত রাত মিনায় অবস্থান করা সুন্নত। ৮ তারিখ দিবাগত রাতে যদি কেউ মিনায় অবস্থান না করে কিংবা এ তারিখে মোটেই মিনায় না যায় তাহলে সে ক্ষেত্রেও তার হজ্ব আদায় হয়ে যাবে। তবে মাকরুহ হবে। (রদ্দুল মুহতার ২/৫০৩; ফাতওয়া হিন্দিয়া ১/২২৭ মানাসিক ১৮৮-১৮৯; আহকামে হজ্ব ৬২)
তালবিয়া পাঠ করার বিবরণ:
ইহরামের পরপর কমপক্ষে একবার তালবিয়া পাঠ করা শর্ত। আর তালবিয়া পড়ার সময়কাল হচ্ছে হজ্বের ইহরামের পর থেকে ১০ তারিখ জামরা আকাবায় কংকর নিক্ষেপের আগ পর্যন্ত। এরপর কংকর নিক্ষেপের সময় থেকে তালবিয়া পাঠ করা বন্ধ করে দিবে। (মানাসিক ২২৫; গুনইয়াতুন নাসিক ১৭০)
চলবে…