চিকিৎসাধীন হযরত শাইখুল হাদীস আল্লামা আব্দুল হাই পাহাড়পুরী দা.বা.
এক কিংবদন্তি আলেমে দ্বীন এর মোবারকময় নাম। যিনি বালাদেশের লাখো আলেম ও তালেবে ইলমের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ উস্তায। সমগ্র মুসলিম উম্মাহর রূহানী মুরুব্বী। হযরত হাফেজ্জী হুজুর রহ. এর জামাতা। হায়! আজ তিনি শয্যাশায়ী। দীর্ঘ ১৫ দিন যাবৎ ঢাকার খিলগাঁও এর খিদমাহ হসপিটালের ৭ম তলার ৭০৯ নং কামরায় ভর্তি।
তিনি জীবনের পুরোটা সময় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন ইলমে ওহীর খেদমতে। প্রতিটি মহল্লায় কি করে মক্তব প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মানুষদেরকে ইলমে দ্বীন শিক্ষা দেয়া যায় সে চিন্তায় ছিলেন বিভোর। যা ছিল হযরত হাফেজ্জী হুজুর রহ. এর সারাজীবনের একটি মিশন। শাইখুল হাদীস আল্লামা আব্দুল হাই পাহাড়পুরী দা.বা. শুধু হযরত হাফেজ্জী হুজুর রহ. এর-ই মতাদর্শের লোক নয় বরং তিনি তো হলেন নববী আদর্শের এক জীবন্ত প্রতিকৃতি। বিনয়ীরও এক মূর্তপ্রতীক।
আটষট্টি বছরের এ জীবনে বহু মক্তব তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন। গড়ে তুলেছেন অসংখ্য ওয়ারিসে নবী। তিনি পবিত্র কুরআনুল কারীমের পর প্রহণযোগ্য ও সুপ্রসিদ্ধ হাদীসের কিতাব তথা বুখারী শরীফের দরস দিয়েছেন ঢাকাস্থ রাহমানিয়া, লালমাটিয়া ও নূরিয়া মাদরাসা ছাড়াও আরোও উল্লেখযোগ্য অনেক বড় বড় মাদরাসায়। কিন্তু আজ তিনি নিথর হয়ে পড়ে রয়েছেন। অনুভূতিহীন একটি জীবন্ত দেহ! হৃদস্পন্দন ছাড়া আর কোথাও কোন নড়াচড়া নেই। সর্বোচ্চ, চোখের কোটর বন্ধ থাকা অবস্থায় সামান্য নড়াচড়া করে তাঁর চোখ।
ঠিক কি যেন বলতে চান তিনি আমাদের। তাঁর সে মহান দায়িত্ব তুলে দিতে চান আমাদের হাতে। যে মহান দায়িত্ব ও মিশন নিয়ে কাজ করেছেন আমাদের উলামায়ে দেওবন্দ ও আকাবিরগণ। তিনি আজ চিকিৎসাধীন। জীবনের কৃত অপরাধ মার্জনা করিয়ে মহান আল্লাহ তা’আলা তাঁর এ প্রিয় বন্ধুকে কবে স্মরণ করে কাছে টেনে নেবেন তার কোন ঠিক নেই।
শুধু দু’আ করবো, “হে আল্লাহ! হে আহকামুল হাকিমীন। তোমার হিকমত বোঝার সাধ্য আমাদের কারো নেই। তাই মিনতি আমাদের পক্ষ থেকে, তোমার সান্নিধ্য যদি এখনই আমাদের মুহতারাম উস্তাযের জন্য কল্যাণকর হয়, তাহলে আর কষ্ট না দিয়ে তোমার এ প্রিয় বান্দাকে তোমার সান্নিধ্যলাভে ধন্য করো। তবে তাঁর সান্নিধ্য তো আজও আমাদের জন্য কল্যাণকর, তাই তাঁকে পূর্ণ সুস্থ করে দিয়ে আমাদেরকে তাঁর সান্নিধ্য থেকে উপকৃত হবার তাওফীক দান করো। আমীন। আমীন। ইয়া রাব্বাল আলামীন।