মিনা, আরাফা ও মুযদালিফায় হাজ্বীসাহেবগণ কিভাবে নামায আদায় করবেন
১. যে সকল বিদেশী হাজ্বীগণ মক্কায় জিলহজ্বের ৮ তারিখের পূর্বে ১৫ দিন বা তারও বেশী সময় অবস্থানের নিয়তে সেখানে অবস্থান করেছেন, তারা মক্কা, মিনা, আরাফা ও মুযদালিফায় নামায আদায়ের ক্ষেত্রে মুকীম হিসেবে চার রাকাতবিশিষ্ট নামায পূর্ণ চার রাকাতই পড়বে। তাদের জন্য ক্বসর করা যাবে না।
২. আর যারা হজ্বের দিনের অর্থাৎ ৮জিলহজ্বের পূর্বে পনের দিনের কম সময় মক্কায় অবস্থান করেছেন, কিন্তু মিনা, আরাফা ও মুযদালিফার দিনগুলোসহ পনের দিন বা তার চেয়ে বেশী সময় অবস্থানের দিন বা তার চেয়ে বেশী সময় অবস্থানের নিয়ত করেন, তারাও মুকীম হিসাবে পূর্ণ নামাযই পড়বেন; তারাও ক্বসর করতে পারবে না।
৩. আর যারা সব মিলিয়েও হজ্বের আগ-পর নিয়ে পনের দিনের কম সময় মক্কায় অবস্থান করে, তাদের জন্য মিনা, আরাফা, মুযদালিফায় ক্বসর করতে হবে।
উল্লেখ্য যে, হজ্বের সময় মিনা, মুযদালিফায় ও আরাফায় নামায নিয়ে পরস্পর বিতর্কে জড়িয়ে পড়াটা মারাত্মক অপরাধ। এ নিয়ে তুলকালাম না করে প্রত্যেক কাফেলার হাজ্বীগণ তার কাফেলার বিজ্ঞ আলেম এর অনুসরণ করাটাই সর্বোত্তম আমল।
এ বিতর্কের মূল কারণটা হলো, বাংলাদেশী হাজ্বীগণ আরবদের আমল দেখে মনে করতে থাকেন যে, তাদেরটাই সঠিক আর আমাদেরটা ভুল। অথচ বিষয়টি এমন নয়! বরং মাযহাবের ভিন্নতার কারণে আমলে এ পরিবর্তন হওয়াটা স্বাভাবিক এবং শরীয়তস্বীকৃত। তাই আরবগণ তাদের মাযহাব হিসেবে তারা ক্বসর পড়েন, তাদের জন্য এটাই সঠিক। আর হানাফী মাযহাব হিসেবে আমরা পূর্ণ নামায পড়ি, আমাদের জন্য এটাই সঠিক। সুতরাং বিতর্ক হবে কেন? আর বিতর্কে জড়াবই বা কেন?
হানাফী মাযহাবের উলামায়ে কেরামের বক্তব্য হল, বিদায় হজ্বের সময় রাসূল সা. কসর করেছেন। তিনি মদীনা শরীফ থেকে মুসাফির হিসেবে তাশরীফ আনার কারণে। কেননা তিনি তখন পনের দিনের কম সময় অবস্থান করেছিলেন। আর আমাদের পূর্ণ নামায আদায় করার আমল হলো পনের দিনের বেশী অবস্থানকারী ব্যক্তির ব্যাপারে। সুতরাং হানাফীয়াদের আমল- সাহাবা ও তাবেঈনদের আমল এবং হাদীসরই পূর্ণ অনুসরণ।
বিস্তারিত দেখুন-
ইমদাদুল ফাতাওয়া: ১/৬৬৭
কিতাবুল মাসায়েল: ৩/২৭৬
আনওয়ারে রহমত: ৭১-৭৫