হজ্জের কল্যাণ ও তাৎপর্য
বর্তমান যুগে সীমাহীন অজ্ঞতা সত্ত্বেও জ্ঞানের দাবী করা হয়। প্রতিটি লোকই নিজ নিজ জ্ঞান-বুদ্ধির জন্য গর্বিত। যা বুদ্ধিতে আসে না তা অশুদ্ধ। যেসব বিষয়ের কল্যাণ সম্পর্কে আমরা জানি না, তা মিথ্যা ও অর্থহীন বলে মনে করি।
এমনকি শরীয়তের অকাট্য আহক্বাম সম্পর্কেও মতামত প্রকাশ করা হয়। শুধু তার অন্তর্নিহিত কল্যাণ সম্পর্কেই নয় বরং তারও কারণ অনুসন্ধান করা হয়। এই ব্যাধিটি এতই ব্যাপক হয়ে পড়েছে যে, প্রতিটি লোকই শরীয়তের বিধানসমূহের কারণ অনুসন্ধান করতে চায় এবং তা ব্যতীত সন্তুষ্টই হয় না। এই সবকিছুই ধর্মহীনতা এবং আল্লাহর বিধানসমূহের মহত্ত্ব সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণেই হয়ে থাকে। নতুবা আমাদের এমন কি যোগ্যতা রয়েছে যে, সেই মহাপরাক্রমশালী খালিক ও মালিকের বিধানসমুহের কারণ অনুসন্ধান করার ধৃষ্টতা দেখাবো?। তিনি মালিক, প্রভু। তার যা ইচ্ছা হুকুম করবেন। আমাদের কেন শব্দটি উচ্চারণ করার কোন অধিকার নেই। আল্লাহ পাক এরশাদ করেন অর্থাৎ, আল্লাহ তা’আলাকে তার কোন কাজ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা যাবে না। পক্ষান্তরে মানুষ যা কিছু করবে তদসম্পর্কে তাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হবে।
তাই এরূপ বলার অবকাশ নেই যে, শরীয়তের বিধানসমূহ তাৎপর্য ও কল্যাণ বিবর্জিত। তবে সকলেই যে তা উপলব্ধি করতে সক্ষম হবে তা সম্ভব নয়। ইসলামী চিন্তাবিদগণ সকল বিধানেরই অন্তর্নিহিত কল্যাণ বর্ণনা করিয়াছে এবং সেসব বিষয়ের স্বতন্ত্র বইও লিখা হয়েছে। এ কথাটি খুব ভালভাবে হৃদয়ঙ্গম করতে হবে যে, শরীয়তের আহকাম কল্যাণের উপরই নির্ভরশীল নয়।
যদি এসব কল্যাণ নাও থাকে তবুও আল্লাহ পাকের আদেশের সম্মুখে আত্মসমর্পণের মস্তক অবনত করা আমাদের জন্য অপরিহার্য কর্তব্য ও ফরয। কেননা আল্লাহ তা’আলা হচ্ছেন মহাপ্রজ্ঞাময়। আর প্রজ্ঞাময়ের কোন কাজই প্রজ্ঞাবিহীন নয়। আমরা যে তার এসব রহস্যের নিগূঢ়তা পর্যন্ত পৌঁছতে পারি না, তা আমাদেরই জ্ঞান-বুদ্ধির ত্রুটি।