মানবতার চর্চা শুরু হোক সর্বত্র
একটি পশু, সে শুধু নিজের ভালটাই বুঝে। নিজ স্বার্থ আদায়ে অন্যের ক্ষতি করতে কোন দ্বিধাবোধ করে না। কিন্তু মানুষ এর থেকে ভিন্ন। একজন মানুষ তার ভালোটা আদায় করবে অন্য কারো ক্ষতি না করে। কোন মানুষ যদি এমনটা না করে বরং অন্যের ক্ষতি করে নিজের ভালোটা আদায় করতে চায়, তাহলে সে আর ‘মানষ’ এর স্তরে থাকে না, চলে যায় পশুর কাতারে। তাকে বলা হয় ‘অমানুষ’। আর তার হীন কাজকে বলা হয় ‘পাশবিক’ ও ‘অমানবিক’।
আমাদের সমাজে আগে ‘মানুষ’ এর সংখ্যা ছিল বেশি। এ জাতীয় ‘অমানুষ’ এর সংখ্যা ছিল খুবই কম। তাই আমাদের জগতটাও ছিল অতি সুন্দর ও চমৎকার। এর কারণ ছিল আমরা সে সময় আলোর পথে চলতাম। মানুষ হবার যে চেষ্টা, যে শিক্ষা- তা আমাদের মাঝে চর্চা হত। ইসলাম ও নৈতিকতাবোধ থেকে আমরা সে শিক্ষা পেতাম।
কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের ব্যাপার হল, আমরা আজ সে আলোর শিক্ষা থেকে দূরে সরে গিয়েছি। এজন্য আমাদের মাঝে ‘মানবতা’ লোপ পেয়ে ‘পশুত্ব’ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আলোকিত মানুষের স্থানগুলো অমানুষরা দখল করছে। সমাজে দুর্নীতি, ধর্ষণ, খুন-খারাবী, খাদ্যে ভেজাল, প্রতারণা ইত্যাদি বিষয় উত্তোরত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসবের একমাত্র কারণ, আমারা আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় আত্মীক উন্নয়নকে উপেক্ষা করে জাগতিক উন্নয়নের দিকটিকে মূখ্য বানিয়ে নিয়েছি। যে ইসলাম আমাদের আলোকিত মানুষ হতে শেখায়, তার শিক্ষা শুধু মসজিদ-মাদরাসায় সিমাবদ্ধ রেখে, সামাজিক ক্ষেত্রে তার অবমূল্যায়ন করছি। এটা আমাদের দেশ, জাতি ও সমাজের জন্য কত বড় ধ্বংসের কারণ, তা আমরা এখনো উপলব্ধি করতে পারছি না। আমরা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যাবার পর উপলব্ধিতে আসলে তা কোন ফল বয়ে আনবে না। তাই সময় থাকতেই এ দেশকে বাঁচাতে হলে ইসলামী মানবতা ও নৈতিকতা শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে এবং তা সকলকেই জানতে হবে।