আশুরার আমল সম্পর্কে বানোয়াট কতগুলো হাদীস
নিম্নে কয়েকটি ভিত্তিহীন বর্ণনা উল্লেখ করা হলো,
مَنْ صَامَ يَوْمَ عَاشُورَاءَ كُتِبَتْ لَهُ عِبَادَةُ سِتِّينَ سَنَةً بِصِيَامِهَا وَقِيَامِهَا.
যে ব্যক্তি আশুরার তারিখে রোযা রাখে, তার আমলনামায় ষাট বছর রোযা রাখার এবং ষাট বছর রাত জেগে নামায পড়ার সওয়াব লিখে দেওয়া হয়।
مَنْ صَامَ يَوْمَ عَاشُورَاءَ أُعْطِي ثَوَابَ عَشَرَةِ آلَافِ مَلَكٍ.
যে ব্যক্তি আশুরার তারিখে রোযা রাখে, তাকে দশ হাজার ফেরেশতার সওয়াব দেওয়া হবে।
مَنْ صَامَ يَوْمَ عَاشُورَاءَ أُعْطِي ثَوَابَ أَلْفِ حَاجٍّ وَمُعْتَمِرٍ.
যে ব্যক্তি আশুরার তারিখে রোযা রাখে, তাকে এক হাজার হাজী ও উমরাকারীর সওয়াব দেওয়া হবে।
مَنْ صَامَ يَوْمَ عَاشُورَاءَ أُعْطِي ثَوَابَ عَشَرَةِ آلَافِ شَهِيدٍ.
যে ব্যক্তি আশুরার তারিখে রোযা রাখে, তাকে দশ হাজার শহীদের সওয়াব দেওয়া হবে।
مَنْ صَامَ يَوْمَ عَاشُورَاءَ كُتِبَ لَهُ أَجْرُ سَبْعِ سَمَاوَاتٍ.
যে ব্যক্তি আশুরার তারিখে রোযা রাখে, তার আমলনামায় সাত আসমানের সওয়াব লিখে দেওয়া হবে।
مَنْ أَفْطَرَ عِنْدَهُ مُؤْمِنٌ فِي يَوْمِ عَاشُورَاءَ فَكَأَنَّمَا أَفْطَرَ عِنْدَهُ جَمِيعُ أُمَّةِ مُحَمَّدٍ عَلَيْهِ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ.
আশুরার তারিখে যার নিকটে কোনো রোযাদার মুমিন ইফতার করল, যেন উম্মতে মুহাম্মাদীর সকলে তার নিকট ইফতার করল।
مَنْ أَشْبَعَ جَائِعًا فِي يَوْمِ عَاشُورَاءَ فَكَأَنَّمَا أَطْعَمَ جَمِيعَ فُقَرَاءِ أُمَّةِ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَأَشْبَعَ بُطُونَهُمْ.
যে ব্যক্তি আশুরার তারিখে কোনো ক্ষুধার্তকে পরিতৃপ্ত সহকারে খাবার খাওয়াবে, সে যেন উম্মতে মুহাম্মাদীর সকল ফকীরকে আহার করালো এবং তাদের উদর পূর্ত করে দিল।
مَنْ مَسَحَ يَدَهُ عَلَى رَأْسِ يَتِيمٍ فِي يَوْمِ عَاشُورَاءَ رُفِعَتْ لَهُ بِكُلِّ شَعْرَةٍ عَلَى رَأْسِهِ دَرَجَةٌ فِي الْجَنَّةِ.
যে ব্যক্তি আশুরার তারিখে কোনো এতিমের মাথায় হাত বুলিয়ে দিল, মাথার প্রতিটি চুলের বদৌলতে জান্নাতে তার মর্যাদা বুলন্দ হবে।
বিভিন্ন পুস্তিকা ও পত্র-পত্রিকায় এ সব কথা উল্লেখ করা হয়ে থাকে এবং বিভিন্ন ওয়ায-মাহফিলে এগুলো বলা হয়ে থাকে। অথচ এগুলোর কোনোটাই গ্রহণযোগ্য সূত্র দ্বারা প্রমাণিত নয়। এগুলো বিশ্বাস করা জায়েয নয়। ওয়াযে বা বক্তৃতায়, বলায় বা লেখায় এগুলো উল্লেখ করাও ঠিক নয়।
ইমাম বায়হাকী রহ. ‘ফাযায়েলুল আওকাত’ গ্রন্থে একটি জাল বর্ণনা উল্লেখ করেছেন। উক্ত কথাগুলো সেই জাল বর্ণনারই অংশবিশেষ। ইমাম বায়হাকী রহ. উক্ত জাল বর্ণনাটি উল্লেখ করার পর তাঁর শায়খের বরাত দিয়ে বলেছেন,
هَذَا حَدِيثٌ مُنْكَرٌ، وَإِسْنَادُهُ ضَعِيفٌ بِمَرَّةٍ وَأَنَا أَبْرَأُ إِلَى اللَّهِ مِنْ عُهْدَتِهِ، وَفِي مَتْنِهِ مَا لَا يَسْتَقِيمُ، وَهُوَ مَا رُوِيَ فِيهِ مِنْ خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرَضِينَ وَالْجِبَالِ كُلِّهَا فِي يَوْمِ عَاشُورَاءَ، وَاللَّهُ تَعَالَى يَقُولُ: {اللَّهُ الَّذِي خَلَقَ السَّمَوَاتِ وَالْأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ} وَمِنَ الْمُحَالِ أَنْ تَكُونَ السِّنَّةُ كُلُّهَا فِي يَوْمِ عَاشُورَاءَ، فَدَلَّ ذَلِكَ عَلَى ضعْفِ هَذَا الْخَبَرِ، وَاللَّهُ أَعْلَمُ.
(বিস্তারিত জানতে দেখুন, আলআসরারুল মারফুআহ ২৯৪-৩০০; আলমানারুল মুনীফ ৪৭-৫২; তানযীহুশ শরীয়াহ ২/১৪৯-১৫১; এসব হাদীস নয় ২/১১৮-১২৫)