রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যেভাবে কাজ করছেন উলামায়ে কেরাম-১
মিয়ানমারের রাখাইনে সেনা ও বৌদ্ধদের গণহত্যার মুখে পালিয়ে আসা নতুন ৪ লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশে। পুরাতন মিলিয়ে বাংলাদেশে সরকারি হিসেবে বর্তমানে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ লাখ ৩০ হাজার।আশ্রয় নেয়া এসব রোহিঙ্গা নানারকম দুর্ভোগে দিন পার করছে। যদিও বাংলাদেশ শুরু থেকেই আন্তরিক এবং যথাসাধ্য তাদের খাবার ও থাকার ব্যবস্থা করছেন, বিশ্বের অনেক দেশও এগিয়ে এসেছে, তবুও সংখ্যাধিক্যে সেসবকে অপ্রতুলই বলছেন ক্যাম্প ঘুরে আসা বিশ্লেষকগণ।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শুরু থেকেই সেবাকর্মে সক্রিয় দেশ বিদেশের আলেমগণ। আর্থিক সাহায্য ও কায়িক শ্রম দিয়ে তারা পাশে থাকছেন রোহিঙ্গাদের। হাজারও কষ্ট দুর্ভোগের মধ্যেও সেগুলো অসহায় শরণার্থীদের মুখে হাসি ফুটিয়ে তুলছে।
সম্প্রতি রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘুরে এসেছেন বিশিষ্ট লেখক অনুবাদ ও মুহাদ্দিস মুহাম্মদ যাইনুল আবিদীন। তার নেতৃত্বে একটি টিম ত্রাণ নিয়ে গিয়েছিল সেখানে। প্রথমে বান্দরবান পরে কক্সবারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ত্রাণ বিতরণ করেছেন তারা। দেখেছেন শরণার্থীদের দুর্ভোগ।
মাওলানা মুহাম্মদ যাইনুল আবিদীন বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সবচেয়ে বেশি অর্থ ও শ্রম দিচ্ছেন আলেমগণ। যদিও আলেমরা প্রচারপ্রত্যাশী না হওয়ায় এগুলো মিডিয়ায় আসছে না। কিন্তু ভেতরে ভেতরে তাদের শ্রম ও সাহায্যই চোখে পড়েছে ক্যাম্পগুলোতে।
তিনদিনে দশ লক্ষ টাকা বিতরণ করেছেন মাওলানা মুহাম্মদ যাইনুল আবিদীনের টিম
আমরা জমিয়তুল উলামার পক্ষ থেকে একটি টিম গিয়েছিলাম। তবে সেখানে তাবলিগ জামাত ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নুসরত সবচেয়ে ভালো ও শৃঙ্খলিতভাবে হতে দেখেছি।
তাবলিগ জামাত রাতের বেলায় খুব নিরিবিলি ত্রাণ দিয়ে আসছে। তাদের অনুসরণ করে আমরাও তিনটা টিম পাঠিয়েছি একেবারে সীমান্তের কাছাকাছি থাকা রোহিঙ্গাদের কাছে। যেখানে অন্যদের যাতায়াতটা খুব সহজ ছিল না।
তাবলিগ জামাত ও আলেমদের কাজের ধরণগুলো এমন- রাতের বেলা দেখা যায় না এমন কাপড় পরে টিম করে বেড়িয়ে যায়, প্রতিটি তাবুর লোকদের ঘুম থেকে উঠিয়ে টাকা হাতে দিয়ে চলে আসেন। এছাড়া সুষ্ঠুভাবে সবার কাছে ত্রাণ পৌঁছানো অসম্ভব। কারণ ত্রাণ নিয়ে কেউ আসছে শুনলেই ছুটে আসবে সবাই। কেননা ওখানে প্রচুর ত্রাণ প্রয়োজন এবং অধিকাংশই ক্ষুধার্ত।
আরেকটি বিষয় হলো, ঢাকা থেকে বসে বসে মনে হবে ত্রাণ নিয়ে অনেক গাড়ি যাচ্ছে, লোকজন বিপুল পরিমাণ ত্রাণ পাচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে চিত্রটা ভিন্ন। সেখানে দুই তিনদিন অবস্থান করলেই বোঝা যায় ত্রাণের পরিমাণ খুবই সামান্য। কারণ ত্রাণ প্রত্যাশী মানুষের সংখ্যা ধারণার চাইতেও অনেক বেশি।
সূত্র : OURISLAM24.COM