কুরবানীর মাসায়েল পর্ব ৪
মুফতী হাফীজুদ্দীন দা.বা.
- প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক মুকীম (মুসাফির নয় এমন) পুরুষ-মহিলা মুসলমান যার কাছে প্রয়োজন অতিরিক্ত সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপা বা এ উভয়ের যে কোন একটির সমপরিমাণ সম্পদ বা টাকা রয়েছে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব। (ফাতওয়ায়ে শামী-৯/৪৫৩-৪৫৪, ফাতওয়ায়ে মাহমুদিয়া -১৭/৩১০, মুদাললাল, ফাতওয়ায়ে আলমগিরী ৫/২৯২)
- মুসাফিরের উপর কুরবানী ওয়াজিব নয় অর্থাৎ যদি কোন ব্যক্তি কুরবানীর দিনগুলোতে নিজ বাসস্থান থেকে শরয়ী ৪৮ মাইল তথা: ৮৮ কিলোমিটার দূরে সফরে থাকে তাহলে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়। (ফাতওয়ায়ে শামী -৯/৪৫৩)
- জিলহজ মাসের ১০, ১১ ও ১২ তারিখে যদি কারো মালিকানায় নিত্য প্রয়োজনীয় চাহিদা থেকে অতিরিক্ত সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপা অথবা তার সমমূল্যের কোন বস্তু থাকে তাহলে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব। কুরবানীর পশুর মূল্য ফকীরকে সদকা করলে কুরবানী আদায় হবে না। হ্যাঁ, যদি কোন বিশেষ সমস্যার কারণে কুরবানী করতে না পারে আর কুরবানীর ৩ দিন শেষ হয়ে যায় তাহলে তার মূল্য সদকা করা আবশ্যক। (ফাওয়ায়ে মাহমুদিয়া ১৭/৩০৯, মুদাললাল)।
- নিত্য প্রয়োজনীয় সম্পদ বলতে- নিজ ও পরিবারের জীবন, ইজ্জত-সম্মান রক্ষার জন্য প্রায় সব সময় যা লাগে তাই প্রয়োজনীয় সম্পদ। পক্ষান্তরে এর অতিরিক্ত সম্পদ নিসাব পরিমাণ হলে কুরবানী করতে হবে। সুতরাং ঘরে সাজানো অব্যবহৃত ডিনার সেট, বড় বড় ডেগ-পাতিল, উন্নতমানের বিছানা-গদী, চাদর-শামিয়ানা, রেডিও-টেলিভিশন ইত্যাদি জরুরী আসবাব পত্রের মধ্যে গন্য নয়। অতএব এগুলোর মূল্য নেসাব পরিমাণ হলে কুরবানী করা ওয়াজিব। (ফাতওয়ায়ে শামী ৯/৪৫৩-৪৫৪)
- নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিকের উপর কোনো গরু, মহিষ ও উটের মাঝে কমপক্ষে এক সপ্তমাংশে শরীক হওয়া অথবা একটা ভেড়া, দুম্বা, ছাগল বা বকরী কুরবানী করা আবশ্যক। সুতরাং কোন ব্যক্তি একটা গরু ক্রয় করে নিজের নামসহ মৃত বা জীবিত ব্যক্তির নাম শরীক করে যদি সাত নাম পূরণ করে তাহলে তা করার সুযোগ আছে। (ফাতওয়ায়ে মাহমুদিয়া ১৭/৩১২)