হিজরী বর্ষের হিসাব রাখার বিধান
আবু বকর সিদ্দিক
হিজরী সন মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি তারিখ পদ্ধতি। এতে মাসের যে নাম ও ধারাবাহিকতা রয়েছে তা স্বয়ং মহান রাব্বুল আলামীন আসমান-যমীন সৃষ্টির শুরুলগ্ন হতেই নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। পবিত্র কুরআনুল কারীমে এসেছে-
إِنَّ عِدَّةَ الشُّهُورِ عِنْدَ اللَّهِ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا فِي كِتَابِ اللَّهِ يَوْمَ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ مِنْهَا أَرْبَعَةٌ حُرُمٌ ذَلِكَ الدِّينُ الْقَيِّمُ
“ প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর কাছে মাসের সংখ্যা বারটি, যা আল্লাহর কিতাব ( লাওহে মাহফুজ) অনুযায়ী সেই দিন থেকে চালু আছে, যেদিন আল্লাহ আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছিলেন। এর মধ্যে চারটি মাস মর্যাদাপূর্ণ। এটাই দীনের সহজ-সরল ( দাবী )। সূরা তাওবা, আয়াত:৩৬
এছাড়া হিজরী সনের সঙ্গে অনেকগুলো ইবাদত সংশ্লিষ্ট রয়েছে, যার হিসাব না রাখলে ঐ ইবাদতগুলো যথাযথভাবে পালন করা সম্ভব হয় না। যেমন: রোযা, হজ্ব ও যাকাত প্রভৃতি ইবাদত। তাই সৌরবর্ষ ভিত্তিক হিসাব রাখা যদিও জায়েয; তথাপি ইসলামী শরীয়তের অনেক বিধানাবলীর পালন যেহেতু চন্দ্র মাসের উপর নির্ভরশীল, তাই ঐ ইবাদতগুলো যথাযথভাবে পালনের নিমিত্তে চন্দ্র মাসের হিসাব রাখা ফরযে কিফায়া। অতএব প্রত্যেক মুসলিম সমাজের অন্তত কিছু মানুষ হলেও হিজরী সনের হিসাব রাখা চাই, যেনো সকলের জন্য সহজে আমল করা সম্ভব হয়।
তবে এটি যেহেতু আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরামের সুন্নাহ; তাই মুসলিম উম্মাহর প্রত্যেক সদস্যের জন্যই এর হিসাব রাখা অত্যন্ত পূণ্যময় ও কল্যাণকর কাজ। এ বিষয়ে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের অবহেলা-উদাসীনতা অত্যন্ত দুঃখজনক, যা কখনো কাম্য নয়।
তথ্যসূত্র: আহকামুল কুরআন লিত-থানভী রহ.,খ.১,পৃ.২৭৯; মাআরেফুল কুরআন,মুফতি শফী রহ.,খ.৪,পৃ.৩৭৩, আহসানুল ফাতাওয়া,মুফতি রশীদ আহমাদ লুধিয়ানভী রহ.,খ.৮,পৃ.২৪৫ ইসলামী মাহীনূ কে ফাযায়েল ওয়া আহকাম,মাও. রূহুল্লাহ নকশবন্দী, পৃ.২৭; আল-মাসায়িলুল মুহিম্মাহ, মুফতি জাফর মিল্লী রাহমানী সাহেব,খ.৯,পৃ.৩৪৭