হাদীসের আলোকে বায়আত
বায়আত সম্পর্কে অনেক হাদীস রয়েছে। ধারাবাহিকভাবে আমরা কিছু হাদীস উল্লেখ করছি-
أَنَّ عُبَادَةَ بْنَ الصَّامِتِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ وَكَانَ شَهِدَ بَدْرًا وَهُوَ أَحَدُ النُّقَبَاءِ لَيْلَةَ العَقَبَةِ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ، وَحَوْلَهُ عِصَابَةٌ مِنْ أَصْحَابِهِ: بَايِعُونِي عَلَى أَنْ لاَ تُشْرِكُوا بِاللَّهِ شَيْئًا، وَلاَ تَسْرِقُوا، وَلاَ تَزْنُوا، وَلاَ تَقْتُلُوا أَوْلاَدَكُمْ، وَلاَ تَأْتُوا بِبُهْتَانٍ تَفْتَرُونَهُ بَيْنَ أَيْدِيكُمْ وَأَرْجُلِكُمْ، وَلاَ تَعْصُوا فِي مَعْرُوفٍ، فَمَنْ وَفَى مِنْكُمْ فَأَجْرُهُ عَلَى اللَّهِ، وَمَنْ أَصَابَ مِنْ ذَلِكَ شَيْئًا فَعُوقِبَ فِي الدُّنْيَا فَهُوَ كَفَّارَةٌ لَهُ، وَمَنْ أَصَابَ مِنْ ذَلِكَ شَيْئًا ثُمَّ سَتَرَهُ اللَّهُ فَهُوَ إِلَى اللَّهِ، إِنْ شَاءَ عَفَا عَنْهُ وَإِنْ شَاءَ عَاقَبَهُ فَبَايَعْنَاهُ عَلَى ذَلِكَ
বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ও লায়লাতুল আকাবার একজন নকীব হযরত উবাদা ইবনুস সামিত রা. বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ।সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর পার্শ্বে এক জামাত সাহাবীর উপস্থিতিতে তিনি ইরশাদ করেনঃ তোমরা আমার কাছে এই মর্মে বায়আত গ্রহণ করো যে, আল্লাহর সঙ্গে কিছু শরীক করবে না, চুরি করবে না, যিনা করবে না, তোমাদের সন্তানদের হত্যা করবে না, কাউকে মিথ্যা অপবাদ দেবে না এবং নেক কাজে নাফরমানী করবে না। তোমাদের মধ্যে যে তা পূরণ করবে, তার বিনিময় আল্লাহর কাছে। আর কেউ এর কোন একটিতে লিপ্ত হয়ে পড়লে এবং দুনিয়াতে তার শাস্তি পেয়ে গেলে, তবে তা হবে তার জন্য কাফফারা। আর কেউ এর কোন একটিতে লিপ্ত হয়ে পড়লে এবং আল্লাহ তা অপ্রকাশিত রাখলে, তবে তা আল্লাহর ইচ্ছাধীন। তিনি যদি চান, তাকে মাফ করে দেবেন আর যদি চান, তাকে শাস্তি দেবেন। আমরা এর উপর বায়আত গ্রহণ করলাম। (বুখারী ১ম খণ্ড, ৭ পৃষ্ঠা, হাদীস নং ১৮)
এ হাদীসে যে বায়আতের কথা এসেছে তা ইসলামগ্রহণ কিংবা জিহাদের উপর বায়আত নয় বরং এটা ঐ বায়আত যা বর্তমান পীর-মাশায়েখ করে থাকেন। যার মাধ্যমে শরীয়তের বিধি-বিধানের উপর আমল করার শক্তি সঞ্চয় হয়।
عَنْ أَبِي مُسْلِمٍ الْخَوْلَانِيِّ، قَالَ: حَدَّثَنِي الْحَبِيبُ الْأَمِينُ، أَمَّا هُوَ فَحَبِيبٌ إِلَيَّ، وَأَمَّا هُوَ عِنْدِي، فَأَمِينٌ عَوْفُ بْنُ مَالِكٍ الْأَشْجَعِيُّ، قَالَ: كُنَّا عِنْدَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، تِسْعَةً أَوْ ثَمَانِيَةً أَوْ سَبْعَةً، فَقَالَ: «أَلَا تُبَايِعُونَ رَسُولَ اللهِ؟» وَكُنَّا حَدِيثَ عَهْدٍ بِبَيْعَةٍ، فَقُلْنَا: قَدْ بَايَعْنَاكَ يَا رَسُولَ اللهِ، ثُمَّ قَالَ: «أَلَا تُبَايِعُونَ رَسُولَ اللهِ؟» فَقُلْنَا: قَدْ بَايَعْنَاكَ يَا رَسُولَ اللهِ، ثُمَّ قَالَ: «أَلَا تُبَايِعُونَ رَسُولَ اللهِ؟» قَالَ: فَبَسَطْنَا أَيْدِيَنَا وَقُلْنَا: قَدْ بَايَعْنَاكَ يَا رَسُولَ اللهِ، فَعَلَامَ نُبَايِعُكَ؟ قَالَ: «عَلَى أَنْ تَعْبُدُوا اللهَ وَلَا تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا، وَالصَّلَوَاتِ الْخَمْسِ، وَتُطِيعُوا – وَأَسَرَّ كَلِمَةً خَفِيَّةً – وَلَا تَسْأَلُوا النَّاسَ شَيْئًا» فَلَقَدْ رَأَيْتُ بَعْضَ أُولَئِكَ النَّفَرِ يَسْقُطُ سَوْطُ أَحَدِهِمْ، فَمَا يَسْأَلُ أَحَدًا يُنَاوِلُهُ إِيَّاهُ
আউফ ইবন মালিক (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নয় বা আট কিংবা সাতজন লোক রাসূলুল্লাহ্ -এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। তিনি বললেন, তোমরা রাসূলুল্লাহ -এর নিকট বায়’আত গ্রহণ করবে কি? অথচ আমরা কিছুদিন আগে তাঁর হাতে বায়’আত গ্রহণ করেছিলাম। তাই আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা তো আপনার নিকট বায়’আত গ্রহণ করেছি। তিনি আবার বললেন, তোমরা রাসূলুল্লাহ -এর নিকট বায়আত গ্রহণ করবে কি? আমরা বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমরা তো বায়আত গ্রহণ করেছি। তিনি আবার বললেন, তোমরা রাসূলুল্লাহ্ -এর নিকট বায়’আত গ্রহণ করবে কি? তখন আমরা আমাদের হাত সম্প্রসারিত করে দিলাম এবং বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা তো আপনার নিকট বায়’আত গ্রহণ করেছি। এখন আবার কিসের উপর বায়আত গ্রহণ করব? তিনি বললেন, (এ কথার উপর বায়আত গ্রহণ করবে যে, তোমরা আল্লাহর ইবাদত করবে এবং তার সঙ্গে অন্য কাউকে শরীক করবে না। পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করবে। আল্লাহর আনুগত্য করবে। তারপর তিনি ফিসফিস করে একটি কথা বললেন, মানুষের নিকট কোন কিছু সাওয়াল করবে না। আমি দেখেছি, এই কাফেলার কারো পশু পৃষ্ঠ হতে চাবুক পড়ে গেলেও সে কাউকে তা উঠিয়ে দেয়ার জন্য অনুরাধে জানাত না। (মুসলিম, হাদীস নং ১০৪৩)