কাযা নামায ও কাযা রোযার বিধান
নামায ও রোযা ইসলামের মৌলিক দুটি বিধান। প্রাপ্তবয়স্ক প্রত্যেক নর-নারীর উপর তা ফরজ। কুরআন ও হাদীসে এর আবশ্যকতা অকাট্যভাবে প্রমাণিত। তাই কেউ যদি নামায রোযা ফরজ হওয়াকে অস্বীকার করে তাহলে সে ইসলামের গণ্ডি থেকে বের হয়ে যাবে। নামায সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন,
حَافِظُواْ عَلَى الصَّلَوَاتِ والصَّلاَةِ الْوُسْطَى وَقُومُواْ لِلّهِ قَانِتِينَ
তোমরা সবনামাযের প্রতি যত্নবান হও, বিশেষ করে মধ্যবর্তী নামাযের ব্যাপারে। আর আল্লাহর সামনে একান্ত আদবের সাথে দাঁড়াও। (সূরা বাকারা-২৩৮)
আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
একজন মুসলিম ব্যক্তি ও কুফুর-শিরকের মাঝে (সীমানা প্রাচির) হলো নামায পরিত্যাগ করা। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৩৪)
আর রোযা সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন,
أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ
হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোজা ফরয করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর, যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার। (সূরা বাকারা-১৮৩)
নামায ও রোযা ফরজ হওয়ার বিষয়টি মানা, বিশ্বাস ও স্বীকার করার পর তা যথাযথ আদায় না করা কবীরা গুনাহ। তাই কারো যদি জীবনে গাফলত অবহেলা ও ইসলামের বিধানের গুরুত্ব না জানার কারণে অথবা যৌবন ও শয়তানের ধোকায় পড়ে নামায-রোযা ছুটে গিয়ে থাকে তাহলে কায়মনে বাক্যে খালেস দিলে তাওবা ও কান্নাকাটা করতে হবে। এর পাশাপাশি যথাসম্ভব নামায ও রোযার ধারনামূলক পরিমান নির্ধারণ করে কাযা আদায় করতে থাকবে। তাহলে আসা করা যায় আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ক্ষমা করে দিবেন।
আর বার্ধক্যজনিত রোগ ও অপারগতার কারণে কারো পক্ষে যদি কাযা রোযা রাখা সম্ভব না হয় এবং পরবর্তিতেও তা আদায় করার সামর্থসৃষ্টি না হয় তাহলে সে রোযার ফিদিয়া দিতে থাকবে।
রোযার ফিদিয়া
রোযার ফিদিয়া হলো, প্রতি রোযার জন্য একজন মিসকিনকে দুবেলা পেট ভরে খাওয়ানো অথবা অর্ধ সা অর্থাৎ প্রায় পৌনে দুই কেজি গম বা তার মূল্য দান করা।
নামাযের ফিদিয়া
আর কেউ যদি পূর্বের কাযা নামায আদায়ে অক্ষম হয়ে যায় ও মৃত্যুর পূর্বে তা আদায় না করে যেতে পারে তাহলে তার জন্য উচিত ওসিয়ত করে যাওয়া- যেন ওয়ারিসরা তার সম্পদ থেকে এর ফিদিয়া আদায় করে দেয়।
নামাজের ফিদিয়া হলো বেতেরসহ প্রতি ওয়াক্ত নামাজের জন্য একজন মিসকিনকে অর্ধ সা অর্থাৎ প্রায় পৌনে দুই কেজি গম বা তার মূল্য দান করা।