জাতীয় সেমিনারে অভিমতঃ দেশে ধর্মান্তর ঠেকাতে না পারলে পূর্ব তিমুরের ভাগ্য বরণের আশঙ্কা রয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীতে এক জাতীয় সেমিনারে বক্তারা বলেছেন, বাংলাদেশে ধর্মান্তরের যে ভয়াবহ অবস’া বিরাজ করছে, এখনই মোকাবেলা না করা গেলে দেশটির পূর্ব তিমুরের ভাগ্য বরণ করার সমূহ আশঙ্কা রয়েছে। বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকাগুলো খ্রিষ্টান মিশনারিদের প্রধান টার্গেটে পরিণত হয়েছে। অর্থের প্রলোভন ও কুরআনের অপব্যাখ্যার মাধ্যমে এই ঘৃণ্য কর্ম পরিচালিত করছে তারা।
কেন্দ্রীয় কচিকাঁচা মিলনায়তনে গতকাল বিকেলে আবনাউ জামিয়াতিল আস’আদ ফাউন্ডেশন এই সেমিনারের আয়োজন করে। জামেয়া শারইয়্যাহ মালিবাগের প্রিন্সিপাল মাওলানা কাজী মু’তাসিম বিল্লাহর সভাপতিত্বে ‘বাংলাদেশে ধর্মান্তরের অপতৎপরতা : উলামায়ে কেরাম ও সুধীজনদের করণীয়’ শীর্ষক এই সেমিনারে উপসি’ত ছিলেন শোলাকিয়া ঈদগাহের খতিব মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসউদ, জামিয়া মাদানিয়া বারিধারার প্রিন্সিপাল মাওলানা নূর হুসাইন কাসেমী, চরমোনাই পীর রহ:-এর সাহেবজাদা মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, খেলাফত আন্দোলনের আমির মাওলানা আহমাদুল্লাহ আশরাফ, বেফাকের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল জব্বার, প্রফেসর হামিদুর রহমান, মাওলানা আবুল ফাতাহ মুহাম্মদ ইয়াহিয়া, মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ প্রমুখ।
বক্তারা আরো বলেন, ধর্ম পালন এবং অন্যকে দাওয়াত দেয়ার অধিকার সব ধর্মাবলম্বীর রয়েছে। কিন’ অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্মান্তর একটি মারাত্মক অপরাধ। এ কাজটিই করছে খ্রিষ্টান মিশনারি ও কথিত কিছু এনজিও গোষ্ঠী। সরকার ও সাংবাদিকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই অপচেষ্টা রুখে দেয়া সম্ভব বলে বক্তারা মন্তব্য করেন।
বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে খ্রিষ্টান হয়ে যাওয়া পাহাড়িদের দ্রুত সংখ্যা বৃদ্ধি যারা ঘটাচ্ছে তারা যদি পাহাড়িদের রাষ্ট্রীয় আনুগত্যের শেকড় কেটে দিতে সক্ষম হয় তবে তা বাংলাদেশের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠবে। এভাবে একটি স্পর্শকাতর এলাকাসহ আমাদের দেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোয় খ্রিষ্টান মিশনারি চক্র খুবই তৎপর হয়ে উঠেছে। লালমনিরহাট, গাজীপুর, ঝিনাইদহ, রংপুর, পাবনা, ময়মনসিংহের দুর্গাপুর, হালুয়াঘাট, নেত্রকোনা, সিরাজগঞ্জসহ বেশ কিছু জেলায় অর্থকড়ির প্রলোভন দেখিয়ে খ্রিষ্টান বানাচ্ছে। ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা শহরে স্কুল ও সেবাসংস’া খুলে মুসলমানদের খ্রিষ্টান বানানোর কাজ করে যাচ্ছে বলে বক্তারা অভিযোগ করেন।
সেবার আড়ালে ধর্মান্তরকরণ
সবাইকে সজাগ থাকতে হবে
২৬ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার ঢাকার সেগুনবাগিচার কেন্দ্রীয় কচি-কাঁচা মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশে ধর্মান্তরের অপতত্পরতা : উলামায়ে কেরাম ও সুধীজনের করণীয়’ শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে দরিদ্র, অসহায় ও সরলপ্রাণ মুসলমানদের খ্রিস্টধর্মে ধর্মান্তরিত করার ষড়যন্ত্রে জড়িত বিভিন্ন সংস্থার অপতত্পরতারোধে সচেতনতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়। আবনাউ জামিয়াতিল আসআদ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত এ সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন আল্লামা কাজী মু’তাসিম বিল্লাহ। আলোচনা করেন মাওলানা আবদুল জাব্বার জাহানাবাদী, খেলাফত আন্দোলনের আমির শাহ আহমাদুল্লাহ আশরাফ, সৈয়দ মুসাদ্দেক বিল্লাহ আলমাদানী, শায়খুল হাদিস উবায়দুল্লাহ ফারুক, মুফতি মীযানুর রহমান সাঈদ, মুফতি মোহাম্মদ আলী, মাওলানা আবদুর রাজ্জাক নদভী, মাওলানা আনোয়ার মাহমুদ, মাওলানা আবুল ফাতাহ মুহাম্মদ ইয়াহইয়া ও আয়োজক প্রতিষ্ঠানের প্রধান মুফতি হাফিজউদ্দিন। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইটিবিদ আলেম ইউসুফ সুলতান।
আলোচকরা বলেন, মিশনারি সংস্থাগুলো বাংলাদেশকে খ্রিস্টান সংখ্যাগরিষ্ঠ ভূখণ্ডে পরিণত করতে সেবার ছদ্মাবরণ ব্যবহার করছে। পাশাপাশি ইসলামের বিভিন্ন বিধান সম্পর্কে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানোর এজেন্ডা নিয়ে কাজ করছে। সরকারের যথাযথ মনিটরিং না থাকায় দিন দিন এরা মুসলমানদের ঈমান সর্বোপরি দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তারা আরও বলেন, লেখালেখি, বক্তৃতা ও দাওয়াতি মেহনতের মাধ্যমে ঈমানের প্রচার-প্রসার ও মিশনারিদের অপতত্পরতা সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি এখন অপরিহার্য কর্তব্য। পাশাপাশি অসহায় দরিদ্র মানুষের সেবায় আরও বেশি যত্নবান হওয়াও আবশ্যক।
ঢাকার বিভিন্ন মাদরাসার প্রিন্সিপাল, বিভিন্ন অঞ্চলে কর্মব্যস্ত ইসলামী চিন্তাবিদ ও সুধীরা এ সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন। বিকাল ৩টা থেকে শুরু হয়ে রাত ৯টা পর্যন্ত চলে এই সেমিনার।
মুহাম্মদুল্লাহ ইয়াহ্ইয়া
Alhamdulillha
This aritlce is a home run, pure and simple!